ট্রাম্প যেভাবে মিয়ানমারকে চীনের হাতে তুলে দিচ্ছেন...
লেখা:ডেভিড ব্রেনার / প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫,
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং এবং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংফাইল ছবি
গত ২৫ জুলাই মিয়ানমারের সামরিক শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর। এ ঘটনা মিয়ানমার প্রশ্নে কয়েক দশক ধরে চলে আসা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পুরোপুরি বিপরীত অবস্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এর মাধ্যমে মিয়ানমারের নিষ্ঠুর সামরিক সরকারের অব্যাহত দমন-পীড়ন ও বিমান হামলার মুখে প্রতিরোধ করে যাওয়া দেশটির গণতন্ত্রপন্থীদের প্রতি সংহতি জানানো হয়েছিল।
এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে অনেকে ‘মিয়ানমারের ওপর ট্রাম্পের পিছু হটা যুদ্ধের’ সর্বশেষ অধ্যায় হিসেবে দেখছেন। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আরেকবার চীনের হাতে কৌশলগত বিজয় তুলে দেওয়া হলো।
নৈতিকতার মানদণ্ডে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ মোটেও অবাক করার মতো বিষয় নয়।ট্রাম্প এরই মধ্যে রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনকে একা ফেলে এসেছেন, গাজায় জাতিগত নিধনযজ্ঞের পক্ষে ওকালতি করেছেন এবং আমেরিকান গণতন্ত্রের যেটুকু অবশিষ্ট আছে, সেটি মুছে ফেলতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন; কিন্তু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া ঘটনাটি শুধু নীতিগত ব্যর্থতা নয়, এটি চরম মাত্রার কৌশলগত ভুলওমিয়ানমার প্রশ্নে মার্কিন নীতি পরিবর্তনের পেছনে কী আছে, সেটি এখনো অস্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি; কিন্তু সময়টা খুব কৌতূহলোদ্দীপক। কেননা, মাত্র কয়েক দিন আগে মার্কিন কংগ্রেসে দুই দলের (রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক)
সমর্থনে তিনটি বিল পাস হয়েছে, যেখানে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয় এবং জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান জ্যেষ্ঠ জেনারেল মিন অং হ্লাইং সম্প্রতি শুল্ক নিয়ে আলোচনার সময় ট্রাম্পের বাড়াবাড়ি রকম প্রশংসা করেছেন।
ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি যে পরিচালিত হচ্ছে ব্যক্তিগত চাটুকারিতা ও আত্মপ্রশংসার ওপর ভর করে, এটা তার আরেকটি দৃষ্টান্ত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পাল্টানোর পেছনে আরও হিসাবি উদ্দেশ্য আছে। ব্যবসায়ী লবিস্টরা ট্রাম্পকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে মিয়ানমারে মাটির নিচে যে বিরল খনিজ আছে, তা স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত সম্পদ হতে পারে।