Followers

২০০ মিটার সড়কে নরকযন্ত্রণা...

২০০ মিটার সড়কে নরকযন্ত্রণা...  আবদুল্লাহপুর মোড় থেকে উত্তরার দিকে পলওয়েল শপিং সেন্টারে যাওয়ার সড়কের ২০০ মিটার অংশ যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।  ড্রিঞ্জা চাম্বুগংঢাকা
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ১৩: ৫৯ 
উত্তরা হাউস বিল্ডিং থেকে আবদুল্লাহপুরের দিকে যাওয়ার পথে অটোরিকশাটি গর্তে কাত হয়ে যায়। গত শুক্রবার দুপুরেপ্রথম আলো...   রাজধানীর আবদুল্লাহপুর মোড় থেকে উত্তরার দিকে পলওয়েল শপিং সেন্টার। সড়কের ওইটুকু অংশ বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসড়কের নিচে অবস্থিত। প্রায় ২০০ মিটার সড়ক চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ওই অংশটুকু এমনভাবে ভেঙে গেছে যে চরম ভোগান্তিই এখন ওই সড়কে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীদের নিত্যসঙ্গী।আবদুল্লাহপুর মোড়ে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য এবং ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বাসচালক ও যাত্রীরা জানিয়েছেন, বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের শুরু থেকেই ওই সড়কে চলাচলে মানুষের দুর্ভোগ ছিল। তবে মাস দেড়েক সময়ের ব্যবধানে সড়কের ওই অংশটুকু ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। ফলে দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে।
গত শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙাচোরা কিংবা খানাখন্দ নয়, সড়কে রীতিমতো বিশাল বিশাল গর্ত। কোনো কোনোটির গভীরতা এক-দেড় ফুট হবে। বৃষ্টির পানি জমে গর্তগুলো একেকটা ছোটখাটো ডোবায় পরিণত হয়েছে। এমন সব গর্ত আর খানাখন্দের মধ্য দিয়েই অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে হেলেদুলে চলছে যানবাহন।বিশাল গর্তের কোনো কোনো অংশে যাত্রীবাহী বাসের নিচের অংশের ঘষা লাগছে। কোথাও আবার প্রাইভেট কার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশার মতো ছোট যানবাহন আটকে যাচ্ছে। সামনের কোনো গাড়ির এমন পরিস্থিতি দেখে পেছনে থাকা অন্য গাড়িগুলো চালকেরা ঘুরিয়ে তুলনামূলক ভালো অংশ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে যানবাহনের ধীরগতি, গর্তে আটকে যাওয়া কিংবা গাড়ি ঘুরিয়ে নেওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে দেখা যায়, উত্তরা হাউস বিল্ডিংয়ের দিক থেকে আবদুল্লাহপুরের দিকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যাচ্ছিল। চালক না বুঝেই পানি জমে থাকা একটি গর্তে সিএনজির সামনের চাকা নামিয়ে দেন। গর্তের গভীরতা বেশি হওয়ায়, সামনের চাকা পুরোপুরি ডুবে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে চালক সিএনজি থামান এবং ভেতরের দুই যাত্রীকে নামান। পরে একজন পুরুষ যাত্রীসহ হেঁটে যাওয়া দুজন পথচারী গর্তে আটকে যাওয়া অটোরিকশাটিকে পেছনের দিকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন।অটোরিকশাচালক সেলিম হোসেন বলেন, জমে থাকা কাদাপানির কারণে ভাঙা গর্ত এত গভীর, তা বুঝতে পারেননি। আরেকটু হলেই তাঁর অটোরিকশাটি উল্টে যেত।আবদুল্লাহপুরে বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসড়কের এক পাশে টঙ্গীর দিক থেকে আসা যানবাহনের নামার র‍্যাম্প, অন্য পাশে হাউস বিল্ডিং বাসস্ট্যান্ড থেকে টঙ্গী-গাজীপুরের দিকে যাওয়া যানবাহনের উড়ালসড়কে ওঠার র‍্যাম্প। এ দুই র‍্যাম্পের মাঝে ও দুই পাশে সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। রাস্তা ভেঙে সৃষ্ট গর্তগুলো এ অংশেই বেশি বড় হয়ে গেছে। পশ্চিম দিকের সড়ক শুকনো থাকলেও অংশটি সরু এবং বড় বড় গর্তের কারণে ঢেউখেলানো। ওই অংশে যানজটও বেশি হয়। তাই উড়ালসড়কের সরাসরি নিচের অংশ দিয়েই বেশির ভাগ যানবাহন চলে।মোহাম্মদপুর থেকে আবদুল্লাহপুর গন্তব্যে যাত্রী পরিবহনকারী পরিস্থান পরিবহনের চালকের সহকারী বারেক হোসেন বলেন, ‘রাস্তার এই অবস্থার কারণে প্রায়ই গাড়ির কোনো না কোনো যন্ত্রাংশ নষ্ট হয় কিংবা ভেঙে যায়। বিশেষ করে গাড়ির নিচের বডি ঘষা খায়, ভেঙে যায়, চাকা ফুটা হয়। কিন্তু আমাদের রাস্তা এইটাই, তাই উপায় না দেখে এমন রাস্তাতেই গাড়ি চালাতে হয়।’
বারেক আরও বলেন, খুব সাবধানে গাড়ি চালানো লাগে। যাত্রীরাও ভয়ে থাকে। যানজটে আটকে থাকলে রাতের বেলা প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।বারেক আরও বলেন, খুব সাবধানে গাড়ি চালানো লাগে। যাত্রীরাও ভয়ে থাকে। যানজটে আটকে থাকলে রাতের বেলা প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহিম মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তা খারাপের কারণে গাড়ির গতি কমে যানজট হয়। তখন ওই অংশে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। রাস্তা ভালো থাকলে যানবাহন অন্তত চলমান থাকত। তখন এ ধরনের অপরাধ করার সুযোগ সৃষ্টি হতো না।ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেন টঙ্গীর স্টেশন রোডের বাসিন্দা এম এম শফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন এই ভাঙাচোরা রাস্তায় চলা যেন এক দুর্বিষহ যুদ্ধ। যানজটে আটকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। অথচ গন্তব্য বেশি দূরে নয়। এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই চান তিনি।সড়ক ভাঙাচোরার কারণে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের কষ্ট ও যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওই অংশের রাস্তা খারাপ। এক–দুই সপ্তাহ বৃষ্টির কারণে আরও বেশি খারাপ হয়েছে। গর্তে উল্টে যাবে, এই ভয়ে গাড়ি খুব ধীরগতিতে চলে।সড়কের বেহাল ও মেরামতের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বিআরটি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কেউ ফোন ধরেননি।..

No comments:

Post a Comment